।। নিউজ ডেস্ক ।।
ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে পাহড়ি ঢলে উলিপুরে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে তীব্র স্রোতে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি বাড়ার পাশাপাশি ভাঙ্গন আতঙ্ক বিরাজ করছে নদী পাড়ের মানুষের মাঝে। তিস্তার ভাঙ্গনে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা ঘাট, কাশিম বাজারে দুই দিনে (মে ৩১ – এপ্রিল ০১) প্রায় ২০-২৫ টি বাড়িসহ ৫০-৬০বিঘা ফসলি জমি, গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন স্থাপনা।
সরেজমিনে, পশ্চিম বজরা ঘাট ও কাশিম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বজরা পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ, পশ্চিম বজরা পুরাতন হাট, বজরা পূর্ব পাড়া জামে মসজিদ ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে।
বজরা ঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বারি, মোজাম্মেল হক, রেজাউল করিম ও গোলাম রব্বানীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদটি রক্ষা করার জন্য বড় বড় গাছ, গাছের ডাল ফেলে পানির গতিপথ পরিবর্তন করার আপ্রাণ চেষ্টা করেও মসজিদটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে একটি প্রাইমারী স্কুল। স্কুলটি ভেঙে গেলে সমাজের অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে ও ছেলে-মেয়েদের আলোর পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এলাকাবাসী মনের ক্ষোভ নিয়ে বলেন, এমপি থেকে শুরু করে ইউপি সদস্যরা শুধু ভোট নিয়ে যায় বড় বড় বুলি আউরিয়ে আমাদের এমন বিপদে তাদের কোন সাড়া পাইনা। শুধু সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দেখি বছরে বছরে। তারা দাবী জানিয়েছেন এখনো সময় আছে অতি দ্রুত জিওব্যাগ ডাম্পিং করলে এলাকার প্রায় কয়েকশ বাড়ি আবাদী জমি স্কুলটিসহ একটি টি-গ্রোয়েন রক্ষা করা যাবে।
অপরদিকে, তিস্তা নদী বেষ্টিত গুনাইগাছ ইউনিয়নে নাগড়াকুড়া শুকদেব কুন্ড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাদাম চাষিরা বাদাম নিয়ে যে স্বপ্ন দেখতো, বাদাম ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় তারা এখন বাদাম নিয়ে পড়েছে দুঃচিন্তায়। অনেক কৃষক বাদাম পরিপক্ব না হওয়াতেও ঘরে তুলে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।
বজরা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ রেজাউল করিম আমিন বলেন, নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে বজরা ইউনিয়নকে রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট যোগাযোগ করেছি তারা শুধু কাজ করবে বলে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এলাকার চরম ক্ষতি হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, “এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং ইতিমধ্যে বজরা কাশিম বাজারের প্রকল্পের কাজ অনুমোদন হয়েছে”। পাউবো কর্তৃপক্ষ পশ্চিম বজরা এলাকা পরিদর্শনে আসবেন বলে জানিয়েছেন।
কুুুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা পানিবৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে আগামী সপ্তাহে ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ নেয়া হবে”।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/এপ্রিল/০২/২১