।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে হত-দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র প্রায় ১৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খোকাকে আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (মে ১৩) বিকেলে ইউপি কার্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান আটকের খবর ছড়িলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদে ৬ হাজার ১’শ ৭৮ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ৪’শ ৫০ টাকা করে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ১’শ টাকা বরাদ্দ দেয়। চেয়ারম্যান ইউপি কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধেক টাকা বিতরণ করেন এবং ৩ হাজার ২৮ পরিবারের টাকা বিতরণ না করে সুবিধাভোগীদের ঈদের পরে আসতে বলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বঞ্চিতরা ইউপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করতে থাকেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু ও উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ করিব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখানে হত-দরিদ্র ৩ হাজার ২৮ পরিবারের বরাদ্দকৃত ৪’শ ৫০ টাকা করে ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ২’শ ৫০ টাকা ওই চেয়ারম্যান দেখাতে পারেননি।
ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল বলেন, ঈদের আগে বরাদ্দকৃত সব টাকা বিতরণের কথা থাকলেও চেয়ারম্যান অর্ধেক টাকা বিতরণ করে বাকী টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা রাখেন।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৬ হাজার ১’শ ৭৮ পরিবারের মধ্যে ৩ হাজার ১’শ ৫০ পরিবারকে টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে গত ৯ মে ওই ইউপির সংরক্ষিত আসনের ৩ সদস্য পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ এর টাকা বিতরণের তালিকা চেয়ারম্যান তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে তৈরি করেছেন। তালিকায় একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির নাম এবং ভূয়া নাম ব্যবহার করে তালিকা প্রস্তুত করছেন বলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার ও গুনাইগাছ ইউপি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ব্যাংক থেকে সমূদ্বয় টাকা উত্তোলন হয়েছে কি-না তা তিনি জানেন না? ভিজিএফ’র অবশিষ্ট টাকা ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব নম্বরে না রেখে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমা আছে তাও তিনি জানেন না? মাষ্টার রোল ঠিক আছে কি-না তা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার ও গুনাইগাছ ইউপি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার নূরে আলম সিদ্দিকী বাদি হয়ে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আটককৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। (মামলা নং-১৩)
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, সরকারি টাকা বিতরণে অনিয়ম করায় গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/মে/১৩/২১