।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের অব্যাহত ভাঙনের ফলে গত ২০ দিনের ব্যবধানে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট, ফসলি পাকা ধানের জমি, বসত ভিটা, মোল্লারহাট জামে মসজিদ, বালাডোবা ঈদগাহ মাঠ, বালাডোবা ইবতেদায়ি মাদরাসা, ক্ষুদের কুঠি কাশেম বাজার জামে মসজিদসহ অনেক স্থাপনা।
নদের ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে কড্ডার বাজার, ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ ক্ষুদেরকুঠি আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, রোস্তম আলী নূরানি মাদরাসা, ব্যাপারী পাড়া ঈদগাহ মাঠসহ কয়েক শত একর আবাদি জমি। ভাঙনে বসত ভিটা বিলীন হয়ে সব হারিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন বালাডোবা ও ক্ষুদেরকুঠি আক্কেল মাহমুদ ব্যপারী গ্রামের কয়েকশ পরিবার।
ভাঙন কবলিত বালাডোবা গ্রামের আলম মিয়া জানান, বাড়িভিটা ভেঙে যাওয়ায় জায়গা না পেয়ে অন্যর বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছি। তিনি ক্ষোভ করে বলেন, ভোটের সময় নেতারা আসেন, এখন আমরা সব হারাচ্ছি নেতাদের দেখা নাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল মন্ডল জানান, এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেল। চরাঞ্চলের মানুষের কেনাবেচার জন্য প্রয়োজনীয় এই হাটটি রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও প্রতিকার মিলেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫ শতাধিক জিও ব্যাগ দেয়া হলেও তা এখন নদীর মাঝে। জিও ব্যাগ নয় স্থায়ী ভাঙন রোধে সিসি ব্লক ফেলার দাবী জানান তিনি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের সভাপতি আকতার হোসেন জানান, এমন অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বেগমগঞ্জ নামক ইউনিয়ন। তিনি আরও বলেন ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে পারে। এ ভয়াবহ ভাঙন রোধে এখনি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বেগমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, অসময়ে নদী ভাঙনে এলাকার অনেক পরিবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেছি। ওনারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, শুকনো সময়েও মোল্লারহাটে নদী ভাঙন রয়েছে। এরই মধ্যে ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে এটা রোধ করার জন্য বাজেট চেয়ে প্রস্তাব করেছি।খুব তাড়াতাড়ি অনুমোদন পেলে আমরা স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করতে পারবো এবং ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/মে/০৭/২১