।। জেলা প্রতিনিধি ।।
নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ব্রিজ থেকে চার বছরের শিশু সন্তানকে পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই আপন মায়ের বিরুদ্ধে। ব্রিজের পাশে ক্ষেতে কাজ করতে থাকা আমিনুল নামে এক দিনমজুর তৎক্ষনাত ছুঁটে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নিয়ে যান। আর এলাকাবাসী অভিযুক্ত মাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের বেরুবাড়ী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম সৌমি (৪)। আর অভিযুক্ত ওই মায়ের নাম লায়লা বেগম (৩৫)। সে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর বালাবাড়ী বাজার এলাকার খোকন আলীর স্ত্রী বলে জানা গেছে। ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলে তার স্বামীর বরাত দিয়ে জানান বেরুবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব।
চেয়ারম্যান জানান, বুধবার দুপুরে বেরুবাড়ী ব্রিজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ওই নারী তার কোলে থাকা শিশু সন্তানকে ব্রিজ থেকে নিচে ফেলে দেন। ব্রিজের নীচের ডারায় প্রায় এক হাঁটু পানিতে শিশুটি পড়ে গেলে পাশেই কাজ করতে থাকা দিনমজুর আমিনুল দৌড়ে গিয়ে শিশুটিকে পানি থেকে উদ্ধোর করে। পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। চেয়ারম্যান আরও জানান, ঘটনার পর ওই নারী কোনও কথা বলছিলেন না। শিশুটি ওই নারীকে তার মা দাবি করলে শিশুটির কাছে তার বাবার নাম ও পরিচয় জেনে তাদের পরিবারের লোকজনদের খবর দেওয়া হয়। পরে শিশুর বাবাসহ ওই নারীর পরিবারের লোকজন এসে শিশুসহ ওই নারীকে বাড়িতে নিয়ে যান।
ওই নারীর স্বামী ও শিশুটির বাবা খোকন আলী জানান, তিনি পেশায় কুষক। তাদের তিন মেয়ে। এদের মধ্যে সৌমি সবার ছোট। সৌমির জন্মের পর প্রায় তিন বছর আগে লায়লা বেগমের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তখন থেকে স্থানীয়ভাবে কবিরাজিসহ বিভিন্ন চিকিৎসা করালেও সে পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে ওঠেনি। বুধবার সকালে সৌমিকে নিয়ে পাশের কাশেমবাজার গ্রামে বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন লায়লা। পরে তারা জানতে পারেন সে নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ীতে সৌমিকে ব্রিজ থেকে ফেলে দিয়ে স্থানীয়দের হাতে আটক হয়েছে।
খোকন আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে লায়লার ভাই ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গিয়ে সৌমি ও তার মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি। সে মূলত মানসিক বিকারগ্রস্থ। এজন্য নিজ সন্তানকে পানিতে ফেলে দিয়েছে। আমরা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রওশন কবিরের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন/এপ্রিল/১৪/২১