।। জেলা প্রতিনিধি ।।
ভূরুঙ্গামারীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে নির্মাণ করা হচ্ছে সোনাহাট নতুন সেতু রক্ষা বাঁধ। সোনাহাট রেলওয়ের পুরাতন সেতুর কাছ থেকে ভূগর্ভস্থ বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন সোনাহাট নতুন সেতুসহ পুরাতন রেলওয়ে সেতু ।
জানাগেছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দুধকুমর নদের ওপর নির্মিত প্রায় দেড়শত বছর আগে তৈরী করা পুরাতন সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে ২’শ ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ টি পিলার সম্বলিত ৬’শ ৪৫ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকল্প এলাকায় মাটির নীচের স্তরে সমস্যা দেখা দেয়ায় দীর্ঘ ১৭ মাস থেকে নির্মিয়মান সেতুটির কাজ বন্ধ। এ অবস্থায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন নতুন নির্মাণাধীন সেতুটি রক্ষায় সেতুর উভয় দিকে ৮’শ ১৪ মিটার দীর্ঘ সেতু রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। বাঁধ নির্মাণের জন্য দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ । সেতুর পশ্চিম তীরে ৩’শ১৪ মিটার বাঁধ নির্মাণ করছে এম এ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রাক্কলন অনুযায়ী বাঁধের টপ ৬ মিটার, স্লোপ ২০ মিটার এবং লাঞ্চিং এপ্রোন ২৮ মিটারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩১ টাকা।
অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম এ এন্টারপ্রাইজ সেতু রক্ষা বাঁধ থেকে মাত্র ১’ শ গজ এবং পুরাতন রেলওয়ে সেতুর পিলারের কাছ থেকে দুটি অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে সেতু রক্ষা বাঁধের মাটি ভরাটের কাজ করছে। দেশব্যাপী সরকার ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করলেও এখানে সড়ক ও জনপথ বিভাগ,পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা জেলা প্রশাসন কেউ তা মানছে না।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত এসও মোস্তাফিজুর রহমান সুজন জানান, তিনি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করেছেন। তার দাবী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছেনা। তাহলে বালু উত্তোলন করে বাঁধে ফেলছে কে? এ প্রশ্নের জাবাবে তিনি জানান, কে বা কারা ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাঁধে ফেলছে। জানাযায়, একটি প্রভাবশালী মহল সাব কন্ট্রাকের মাধ্যমে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বাঁধে ফেলছে।
এব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ম্যানেজার ফজলুল হক জানান, তার প্রকল্প এলাকায় কোন বালু ফেলা হচ্ছেনা। স্থানীয় লোকজন বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ড্রেজার মালিক গোলাপ মিয়া জানান, শাহজাহান সোহাগের নির্দেশে তিনি বালু উত্তোলন করছেন। এব্যাপারে শাহজাহান সোহাগের সাথে মোবাইলে যোগাাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি (তদন্ত) জাহেদুল ইসলাম জানান, আমরা খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//সুভাষ/এপ্রিল/১৩/২১