।। জেলা প্রতিনিধি ।।
সাহসী সাংবাদিকতার স্বীকৃতি স্বরুপ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হক পদক – ২০২১ পাচ্ছেন বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান। সোমবার (২৯ মার্চ) চিলমারীতে আয়োজিত তৃতীয় পন্ডিত বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, বই মেলার সমাপনী দিনে স্থানীয় গুণিজন ও সংগঠনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। তিন দিনবাপি বই মেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী দিনে প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়া একশ’ ৯ শিক্ষার্থীকে পুরষ্কৃত করা হয়। সংগঠক নাহিদ হাসান নলেজের সভাপতিত্বে সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম।
আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জামিউল ইসলাম বিদ্যুৎ জানান, তৃতীয় বারের মতো আয়োজিত এই বই মেলায় প্রথম বারের মতো সাহিত্য-সংস্কৃতি-গবেষণা-সাংবাদিকতা ও গণসংগ্রামে ভূমিকা রাখায় দুইজন কৃতি ব্যক্তিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হক পদক প্রদান করা হয়। সাহসী সাংবাদিকতায় আরিফুল ইসলাম রিগান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণায় ভূমিকা রাখায় এসএম আব্রাহাম লিংকনকে প্রথমবারের মতো এই পদকে ভূষিত করা হয়েছে। আগামী ১৭ এপ্রিল মনোনীত দুই বাক্তির কাছে পদক হস্তান্তর করা হবে।
পন্ডিত বই মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ হাসান নলেজ জানান, সাহসী সাংবাদিকতার কারণে সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের দ্বারা সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান নির্যাতিত হয়েছেন। এই পদকের মাধ্যমে আমরা তাঁর লড়াইকে সমর্থন জানালাম।
প্রসঙ্গত, জেলা প্রশাসনের একটি পুকুর সংস্কার করে কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নামে নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে গত বছর ১৩ মার্চ মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে তার বাড়ির মূল ফটক ও ঘরের দরজা ভেঙে মারতে মারতে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট।
এরপর তাকে প্রথমে এনকাউন্টার দেওয়ার উদ্দেশ্যে জেলা শহরের ধরলা ব্রিজের পূর্ব পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফিরিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে মাদকের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এনডিসি এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও হাইকোর্টের আদেশে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ডিসি সহ জড়িত অজ্ঞাতনামা ৩৫/৪০ জনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম থানায় ফৌজদারি মামলা করেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। বর্তমানে সেই মামলা চলমান রয়েছে।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন/মার্চ/৩০/২১