।। জেলা প্রতিনিধি ।।
কুড়িগ্রামে কলেজ শিক্ষক ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আতাউর রহমান মিন্টুর ডান হাতের কবজি কেটে নেওয়াসহ তার ওপর গুরুত্বর হামলার বিচার ও চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে আহত মিন্টুর পরিবার। শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে জেলা সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের মিন্টুর নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এই দাবি করে তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মিন্টুর পিতা আলতাফ হোসেন, মা ফাতেমা বেগম, বড় ভাই রাজু সরকার। এসময় মিন্টুর স্ত্রী নওরিন আক্তার তার একমাত্র শিশু সন্তানসহ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মিন্টুর বাবা আলতাফ হোসেন জানান, সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলে মিন্টুর নিকট চাঁদা দাবি করে আসছিল। পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়াসহ তাদের বসতবাড়িতে হামলাও করেছিল। কিন্তু মিন্টু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার ওপর এই পৈশাচিক হামলা চালানো হয়েছে। বাঁধনসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু তারা স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার আশ্রয়ে থাকার কারণে পুলিশ এখনও তাদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ করেন মিন্টুর বাবা।
মিন্টুর বড় ভাই রাজু সরকার দাবি করেন, মিন্টুর ওপর হামলাকারীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর সমর্থক। তার ছত্রছায়ায় তারা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তারা এই হামলার বিচার পাবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
রাজু সরকার বলেন,‘ আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তিনি হস্তক্ষেপ না করলে আমার ভাইয়ের ওপর হামলার বিচার পাবো না। মিন্টুকে পঙ্গু করার পেছনে দায়ী সন্ত্রাসী ও তাদের মদদদাতাদের আমরা বিচার চাই, মিন্টুর সুচিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাই।’ পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি করেন তিনি।
এর আগে গত ১৬ মার্চ দুপুরে জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের পালপাড়া এলাকায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিন্টু। এতে তার ডান হাতের কবজি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অপর হাত ও দুই পা গুরুত্বর জখম হয়। বর্তমানে মিন্টু ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা মেহেদী হাসান বাঁধনসহ ছয়জন জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
পরে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) মিন্টুর বাবা আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় বাঁধনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। তবে গত চার দিনেও কোনও আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আতাউর রহমান মিন্টু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলীর আপন ভাগিনা। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও স্থানীয় একটি কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। আর অভিযুক্ত বাঁধন ও তার বাহিনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমদ মঞ্জুর রাজনীতির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে মিন্টুর পরিবার।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন/মার্চ/২০/২১