।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুর উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে সরকার নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ প্রকাশ্যে বিক্রি ও ব্যবহার হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন পাটের তৈরি ব্যাগের ব্যবহার উঠে গেছে, তেমনি পলিথিনের অবাধ ব্যবহারে পরিবেশের ও স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করে আইন রয়েছে। তারপরও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যবহার বন্ধে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে না
জানা গেছে, বাংলাদেশে ১৯৮২ সালে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে পলিথিন ব্যাগ তৈরি ও ব্যবহার শুরু হয়। আর ব্যবহারে সুবিধা ও সহজলভ্য হওয়ার দরুন অতি অল্প সময়ের মধ্যে দেশে পলিথিন ব্যাগের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পরবর্তীতে আস্তে আস্তে পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য পলিথিনের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকগুলো প্রকাশ পায়। এতে করে দেশের সমাজ সচেতন মানুষ পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি ও ক্ষতিকর পলিথিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো পলিথিনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে। এ অবস্থায় ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তৎকালীন সরকার রাজধানী ঢাকায় এবং একই বছরের ৩১ মার্চ থেকে সারাদেশ পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করেন। তবে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন- ১৯৯৫ (সংশোধন ২০০২) এর অধীন সরকার পণ্যের মোড়কের জন্য ৩৫ ও ৫৫ মাইক্রোন পলিথিন ব্যাগ উৎপাদনের অনুমতি প্রদান করে। আর এই সুযোগে এক শ্রেণীর অসৎ পলিথিন ব্যবসায়ী মোটা পলিথিন উৎপাদনের পাশাপাশি পাতলা, স্বচ্ছ পলিথিন ব্যাগ তৈরি করে দেদারছে বাজারজাত করছে। যদিও বিগত তত্তাবধায়ক সরকারের আমলে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকার কারণে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। সে সময় সারাদেশের মতো উলিপুরেও স্থানীয় প্রশাসন নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু বতর্মানে প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণে আবারও সারাদেশের মতো উলিপুর ও আশপাশের হাটবাজারগুলোতে প্রকাশ্যে সরকার নিষিদ্ধ স্বচ্ছ ও পাতলা পলিথিন ব্যাগ বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে।
কাগজে কলমে নিষিদ্ধ হলেও নিষিদ্ধ হয়নি বাজারে। অন্যান্য পন্যের মতো পলিথিন ব্যাগ মজুদ করছে ব্যবসায়ীরা। উলিপুর সদরসহ উপজেলার অন্যান্য বাজার থেকে কাঁচা তরকারী, ডাল-ডিমসহ যে কোন কিছু কেনা কাটা করলেই ব্যবসায়ীরা ক্রেতার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে পরিবেশ দূষনকারী পলিথিন ব্যাগ।
পলিথিনে পন্য বিক্রয়ের ব্যাপারে এক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, কাগজের প্যাকেটে ব্যয় বেশী আর নিরাপদ না। ফলে এখন নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মতোই ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ। যে সব ক্রেতা পলিথিন ব্যাগে বাজার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তারাও একই কথা বলেন। উপজেলার দুর্গাপুর,পান্ডুল,অনন্তপুর,বজরা, মাঝবিল, মন্ডলেরহাট বাজার সহ আরো কয়েকটি বাজারে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। পলিথিন ব্যাগ বিক্রির সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা ৬ মাসের কারাদন্ড হলেও পলিথিন ব্যাগ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন অভিযান না হওয়ায় এই আইনকে পরোয়া করছেন না তারা। পলিথিন ব্যাগের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালানোর আশাবাদ ব্যক্ত করছেন সচেতন মানুষজন।
এ ব্যাপারের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, খুব শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
//নিউজ/উলিপুর//সুভাষ/মার্চ/১১/২১