।। জেলা প্রতিনিধি ।।
ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম পানিমাছকুটি গ্রামে এক ব্যাক্তির দাফনের উদ্দেশে সদ্য খনন করা কবরের দেওয়ালের গায়ে মাটিতে আরবি হরফের ন্যায় ছাপ দেখা যাওয়ার খবরে ওই কবর দেখতে উৎসুক জনতার ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার (জানুয়ারি ৭) সকালে এ ঘটনা ঘটে। মানুষের ভিড় সামাল দিতে এবং শৃঙখলা বজায় রাখতে ওই কবরের পাশে পুলিশ মোতায়েন করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তেীহিদুর রহমান এবং ফুলবাড়ী থানার ওসি রাজীব কুমার রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার (জানুয়ারি ৬) রাতে পানিমাছকুটি গ্রামের মৃত জব্বার মুন্সির ছেলে ইসরাঈল হোসেন ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে পানিমাছকুটি গ্রামের বাড়িতে কবর খনন করা হয়। বৃহস্পতিবার (জানুয়ারি ৭) সকালে বাড়ির পাশে কবর খননের সময় স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থী প্রথম কবরের গায়ে মাটিতে আরবি হরফের ছাপ দেখতে পেয়ে কবর খননকারী আব্দুল বারী ও আমির আলীকে জানায়। মহূর্তেই এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসুক মানুষের ঢল নামে। পরে স্থানীয় প্রশাসন খবর পেয়ে শৃঙ্খলা রক্ষায় ওই কবরে পাশে পুলিশ মোতায়েন করে।
মৃত ইসরাঈল হোসেনের ভাতিজা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার চাচা ঢাকায় হঠাৎ হার্ট এ্যাটাক করে মারা যান। আজ বৃৃহস্পতিবার (জানুয়ারি ৭) বাদ জোহর তাকে দাফন করার উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশে কবর খনন করা হচ্ছিল। কিন্তু সকালে কবর খননের সময় হঠাৎ করে কবরের গায়ের মাটিতে আরবি হরফ দেখা যায়। খননকারীরা কবরের মাটি যত ছেঁচতে থাকেন ততই লেখা স্পষ্ট হতে থাকে। ছেঁচতে ছেঁচতে কবরের আকার বড় হতে থাকলেও আরবি হরফের চিহ্ন মুছে যাচ্ছিল না বরং আরও স্পষ্ট হচ্ছিল। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় আলেমরা এসে নিশ্চিত করেন যে ছাপগুলো আরবি হরফের।’
স্থানীয় আলেমদের বরাত দিয়ে আবু বকর জানান, আলেমরা বলেছেন যে কবরের গায়ের এক পাশে আরবি হরফে বিছমিল্লাহ , ইয়া ও শিন লেখার হরফের ছাপ এবং অপর পাশে মিম, হা এবং মিম হরফের ছাপ রয়েছে।
ওই কবর দেখতে যাওয়া উপজেলার নন্দিরকুটি চৌপথি জামে মসজিদের খতিব ও স্থানীয় বিদ্যাবাগিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘কবরের পশ্চিম পাশের গায়ে মাটিতে উপরের অংশে বিছমিল্লাহ লেখার ছাপ এবং নিচে স্পষ্ট ভাবে ইয়া এভং শিন হরফের ছাপ রয়েছে। আর কবরের পূর্ব পাশের গায়ে মাটিতে মিম, হা ও মিম হরফের ছাপ রয়েছে। এই তিন (মিম, হা ও মিম ) হরফ দিয়ে মোহাম্মদ লেখা বোঝায়।’
কবরের গায়ের মাটিতে এরকম লেখা পাওয়া অনেকটা স্বাভাবিক জানিয়ে আনিছুর রহমান বলেন,‘ মহান আল্লাহ তার সৃষ্ট মানব জাতিকে মাঝে মাঝেই তার নিদর্শন দেখান। কবরের গায়ের মাটিতে আরবি হরফের চিহ্ন তারই প্রমাণ। মানুষ যেন এগুলো দেখে আল্লাহর দিকে মুখ ফিরিয়ে তার ইবাদত করে এজন্যই আল্লাহ বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে কিছু নিদর্শন দেখান।’
ইউএনও তেীহিদুর রহমান জানান, `স্থানীয়দের মাধ্যমে কবরে আরবি হরফের ছাপ ভেসে ওঠার খবর পেয়েছি। তবে সেগুলো আরবি হরফ কিনা তা আলেমরা ভালো বলতে পারবেন। ওই স্থানে উৎসুক জনতার ভিঢ় সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে;।
ওসি রাজীব কুমার রায় জানান, খবর পেয়ে ওই কবরের স্থানে পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কবরকে ঘিরে উৎসুক হাজারো জনতার গমনাগমন চলছিল।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন/জানুয়ারি/০৭/২১