।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে এটি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আপাতত কৃষি, পশু ও মৎস্য বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, পিছিয়ে থাকা উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে শিক্ষা ও গবেষণার বিস্তার ঘটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উদ্যোগ নেন। প্রস্তাবিত ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হলে বৃহত্তর উত্তরাঞ্চলে কৃষিরও আধুনিকায়ন হবে।
কবে থেকে এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে তার দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আইনটি পাস হলে জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হবে। তবে কুড়িগ্রামেই পছন্দসই যে কোনো জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হবে। এসব বিধান রেখে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০২০-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে সরকার। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল সভায় এটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন হতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, কুড়িগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই জেলায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রামে এটি প্রতিষ্ঠা হলে দেশে মোট আটটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। আইন পাসের পর বিশ্ববিদালয়ের জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম নেওয়া হবে।
গত ৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
ওই অনুষ্ঠানে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, কুড়িগ্রামকে মানুষ পশ্চাৎপদ এলাকা বলে জানে। আপনি ক্ষমতায় আসার পর কুড়িগ্রামের মানুষের জন্য না চাইতেই অনেক কিছু করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণার পরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আইনের খসড়া তৈরি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে সবার মতামতও নেওয়া হয়। এখন এটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। এর পর জাতীয় সংসদে আইন পাস হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো স্থাপনের কাজ শুরু হবে।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষিবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কৃষি খাতে উদ্ভাবনী সুযোগ সৃষ্টি, সহায়তা ও উৎসাহ প্রদান, টেকসই কৃষিপ্রযুক্তি ও উচ্চফলনশীল কৃষিজ দ্রব্যের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এ বিশ্ববিদ্যালয়েও চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং অন্যান্য কর্মকর্তা থাকবেন। সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অন্যান্য সংস্থা নির্ধারণেরও কথা বলা হয়েছে খসড়ায়। বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিজিটিং অধ্যাপক, ইমেরিটাস অধ্যাপক, পরামর্শক, গবেষণা সহকারী, স্কলার বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে বিভিন্ন বাছাই বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ করা যাবে।
এ ছাড়া আজকের মন্ত্রিসভা বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২১ সালের প্রথম অধিবেশনের জন্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন, বাংলাদেশ গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিস নীতিমালা ২০২০-এর খসড়া অনুমোদন, কভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) সংক্রমণ রোধে স্থানীয় সরকার বিভাগের নেওয়া পদক্ষেপ ও কর্মপরিকল্পনাও মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হতে পারে।
সূত্রঃ samakal