|| নিউজ ডেস্ক ||
কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা নিয়ে দলীয় কোন্দল চরমে উঠেছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর মাঠ না ছাড়ার ঘোষণা ও দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে বিক্ষোভের কারণে এ উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য কুড়িগ্রাম পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিউল ইসলাম। তবে পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজু ও বহিষ্কৃৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হাসান দুলালও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। যদিও গতকাল বৃহস্পতিবার বাছাইয়ে মোস্তাফিজার রহমান সাজুর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল শহরের খেজুরেরতল ও প্রেস ক্লাবে দলীয় প্রার্থী কাজিউল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সাজুর সমর্থকরা। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও এলাকাবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে দাবি করা হয়, ঘোষিত প্রার্থী কাজিউল ইসলামের বাবা একজন রাজাকার। কাজেই তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে স্বচ্ছ ইমেজের কাউকে মনোনয়ন দিতে হবে।
অন্যদিকে কাজিউল ইসলামের সমর্থকরা জানিয়েছেন, দলীয় নেত্রীর সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলীয় প্রার্থীকে হারানোর ষড়যন্ত্র করছে দলেরই একটি গ্রুপ। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজুর ভাই পৌর বিএনপির সহসভাপতি বলে প্রচার চালাচ্ছে আরেকটি গ্রুপ। এভাবে প্রার্থিতা নিয়ে বিরোধ ও কাদা ছোড়াছুড়িতে বিব্রত দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্র জানায়, বিগত কাউন্সিল ঘিরে কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ দুটি ধারায় বিভক্ত হয়। একটি ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলী, অন্যটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহম্মেদ মঞ্জু। দু’জনের মতানৈক্যের কারণে কাউন্সিলের ৯ মাস পরেও এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি।
কুড়িগ্রাম পৌর নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী কাজিউল ইসলাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলীর সমর্থক। অন্যদিকে আমান উদ্দিন মঞ্জুর সমর্থক মোস্তাফিজার রহমান সাজু।
এ ব্যাপারে মোস্তাফিজার রহমান সাজু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজাকার পুত্র মনোনয়ন পেলেও কোনো দোষ নেই। অথচ আমার ভাই কোন আমলে বিএনপি করেছে—সেটাই বড় করে দেখা হচ্ছে। আমার মনোনয়নপত্র অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। আপিলে আশা করি, প্রার্থিতা ফিরে পাব।’
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি চাষি এম এ করিম বলেন, ‘মানববন্ধনের উদ্যোক্তা সাজুর পরিবার বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। মনোনয়ন না পেয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করার অর্থ হচ্ছে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করা। কাজিউল ইসলাম ১২ বছর ধরে পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে একবার দলের সমর্থনে নির্বাচনে অংশও নিয়েছেন। কাজেই হঠাৎ করে তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করি।’
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ