।। জেলা প্রতিনিধি ।।
বাদী হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় ৫৭ ধারার মামলায় আসামি হওয়া রৌমারী উপজেলার দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদক সাংবাদিক আনিছুর রহমানকে প্রায় তিন বছর পর মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন ওই মামলা থেকে সাংবাদিক আনিছকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। আনিছুর রহমানের আইনজীবী ইব্রাহীম খলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রৌমারী উপজেলার যুবলীগ নেতা শাহা কামালের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর সাংবাদিক আনিছকে ৫৭ ধারার মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিনি প্রথম দফায় ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫১ দিন কারাভোগ করেন। পরবর্তীতে আবারও ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ২০ দিন কারাভোগ করেন। দুই দফায়ই তাকে উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আদেশ দেওয়া হয়।
সাংবাদিক আনিছুর রহমান ও মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে দেওয়া আপত্তিকর একটি পোস্টের স্ক্রিনশট নিয়েছিলেন সাংবাদিক আনিছ। এরপর পাশে বসে থাকা শাহ কামাল নামের এক যুবলীগ নেতা প্রমাণ হিসাবে তা শেয়ারইটের মাধ্যমে নিজের ফোনে নিয়ে পোস্টদাতার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু ওই পোস্টদাতাকে আসামি করে ৫৭ ধারায় মামলা দায়েরের জন্য সাংবাদিক আনিছকে আহবান জানান রৌমারী থানা পুলিশের তৎকালীন অফিসার ইন চার্জ (ওসি)। কিন্তু, তিনি মামলায় জড়াতে রাজি না হয়ে পুলিশের প্রস্তাব একাধিকবার ফিরিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ৫৭ ধারার ওই মামলার অভিযোগপত্রে সাংবাদিক আনিছুর রহমানের নামও সংযুক্ত করে দেয় পুলিশ। এ মামলায় ফেসবুকে পোস্টদাতা হিসেবে সুমন মিয়া নামে রৌমারী উপজেলার ধনারচর গ্রামের এক যুবককে প্রধান আসামি করা হলেও তাকে কখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। পরবর্তীতে ফরেনসিক প্রতিবেদনে মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চলতি বছরের ২৩ মার্চ পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে সাংবাদিক আনিছসহ অপর আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
সাংবাদিক আনিছ জানান, আমি শুরু থেকে বলে এসেছি আমাকে শুধুমাত্র হয়রানি করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন ওসি আমাকে এই মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমি নির্দোষ হলেও আমাকে একাধিকবার কারাভোগ করতে হয়েছে। তারা আমাকে গ্রেফতারের পর আমার ফোনসহ আমার বাড়ি থেকে কম্পিউটার ও অন্যান্য মালামাল জব্দ করে। আমি মামলা থেকে মুক্ত হলেও জব্দকৃত মালামাল এখনও ফেরত দেওয়া হয়নি।
অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম খলিল জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইবুনাল আদালত পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন এবং পুলিশি তদন্তে সাংবাদিক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক সাংবাদিক আনিছকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। এসময় সাংবাদিক আনিছও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন/নভেম্বর/৫/২০