।। জেলা প্রতিনিধি ।।
পূর্ব বিরোধ মিমাংসা করতে স্থানীয়রা দুই পক্ষকে নিয়ে সালিশে বসেছিল। শুনানী শেষে জুরি বোর্ডের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরামর্শ করার এক ফাঁকে মাহালম মিয়া নিজের কাছে থাকা দা দিয়ে প্রতিপক্ষ আমিনুর ইসলামের মাথায় ও বাহুতে কোপ মারে। গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আমিনুর। ঘটনার আকস্মিকতায় উপস্থিত লোকজন ঘাতক মাহালমকে আটক করে পুলিশে দেয়। গুরুতর আহত আমিনুরকে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ২২ দিন চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আমিনুর। ২০০৮ সালে সংঘটিত এ হত্যাকান্ডের অপরাধে অভিযুক্ত একমাত্র আসামি মাহালম মিয়াকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে এ আদেশ দেয় আদালত। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্রাহাম লিংকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আমিনুর ইসলাম (২৩) জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কুটি বামনডাঙা গ্রামের মনছার আলীর ছেলে। আসামি মাহালম মিয়া (৪৮) একই গ্রামের মৃত বাসক শেখের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৫ জানুয়ারি জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কুটি বানডাঙা গ্রামে আমিনুর ইসলামের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা অভিযুক্ত মাহালম মিয়াকে আটক করে পুলিশে দেয়। ভুক্তভোগী আমিনুর ইসলামের চাচা ছামছুল হক বাদী হয়ে ঘটনার রাতেই নাগেশ^রী থানায় মামলা দায়ের করেন। আমিনুর প্রায় ২২ দিন চিকিৎসাধীন থেকে মারা গেলে মামলায় ৩০২ ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে আসামি মাহালম মিয়া জামিন নিয়ে নিয়মিত হাজিরা দিলেও মামলার আর্গুমেন্ট হেয়ারিং ( যুক্তি-তর্ক শুনানী) পর্যায়ে এসে সে পলাতক থাকে। ঘটনার প্রায় ১২ বছর পর আসামির অনুপস্থিতিতে আজ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন পিপি আব্রাহাম লিংকন এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এটিএম এরশাদুল হক চৌধুরী শাহীন।
পিপি আব্রাহাম লিংকন জানান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও হত্যাকান্ডের মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এ রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অপরাধীরা জানবে যে, কাউকে হত্যা করে পার পাওয়া যায় না।
প্রসঙ্গত, গত দুই মাসে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এটি তৃতীয় মৃত্যুদন্ডের রায়। এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর করিম মিয়া ও ২৯ সেপ্টেম্বর আব্দুস সাত্তার নামে দুই ব্যাক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয় আদালত।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন /অক্টোবর/২০/২০