|| নিউজ ডেস্ক ||
উলিপুরে এক গৃহবধুকে রাতভর আটকে রেখে পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ১৫ দিন পূর্বে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় ওই গৃহবধু বাদী হয়ে শনিবার (১০ অক্টোবর) থানায় মামলা করলে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেন। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার রাজারঘাট এলাকায়।
মামলা ও গৃহবধুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পৌরসভার বলদিপাড়া গ্রামের ওই গৃহবধু (২৫) এক সন্তানের জননী। তার স্বামীর অনুপুস্থিতিতে প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলীর পুত্র ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম (৩০) তাদের বাড়িতে আসতেন এবং তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধুকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন রবিউল ইসলাম। ঘটনার দিন গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে রবিউল ইসলাম ওই গৃহবধুকে নতুন করে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন। এরপর গৃহবধু তার দেড় বছরের শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে উলিপুর বাজারে রবিউল ইসলামের সাথে দেখা করেন।
পরে একটি অপরিচিতি অটোরিক্সাযোগে রবিউল ইসলাম ওই গৃহবধুকে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রাজারঘাট গ্রামের জনৈক আবু বক্কর (৩৫) এর ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় রবিউল ইসলামের সঙ্গী ওই এলাকার সেফাত উল্যার ছেলে কায়ছার আলী (৪০), ফকর উদ্দিনের ছেলে সোবহান আলী লিটন (৪২) ও আবুল হোসেনের ছেলে মমিনুল ইসলাম (৩৮) ওই গৃহবধুকে রাতভর পালাক্রমে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে।
পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে ওই গৃহবধুকে ঘরের মধ্যে একা রেখে তারা সটকে পরে। এরপর গৃহবধু নিরুপায় হয়ে অটোরিক্সাযোগে চিলমারী উপজেলাধীন তার পিতার বাড়িতে চলে যান।
গৃহবধুর শ্বশুর (নুর ইসলাম) অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার কয়েকদিন পর তার ছেলের স্ত্রী বাড়িতে ফিরে আসলে রবিউল ইসলাম পুণরায় তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে ওই গৃহবধু রাজি না হলে রবিউল ইসলাম গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করার ভয় দেখাতে থাকেন। এতে গৃহবধু নিরুপায় হয়ে তাকেসহ পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে রবিউল ইসলামের বিচার চান। এ ঘটনায় রবিউল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওই গৃহবধু বাদী হয়ে শনিবার (১০) অক্টোবর রবিউল ইসলামসহ ৫ জনের নামে উলিপুর থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবু বক্কর, কায়ছার আলী, সোবহান আলী লিটন ও মমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন। কিন্তু মামলার মূল আসামী রবিউল ইসলাম পলাতক থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে ওই এলাকার কাউন্সিলর আনিছুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে (০১৭৯৬০৪০০৭৪) বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উলিপুর থানার ওসি (তদন্ত) রুহুল আমীন জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে শনিবার দুপুরে (১০ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//চন্দন/অক্টোবর/১০/২০