|| নিউজ ডেস্ক ||
বিগত ৮০ বছরের মধ্যে রংপুরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ভাসছে গোটা রংপুর নগরী। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার রাত ১১টা থেকে রোববার সকাল সাতটা পর্যন্ত আট ঘণ্টায় ৪৪৯ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় ২৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ছিল।
টানা বর্ষণের পানিতে নগরীর ১৪৮টি পাড়া-মহল্লা তলিয়ে গেছে। বাড়িঘর-দোকানপাটেও পানি ঢুকেছে। এখনো চলছে বৃষ্টিপাত। অনেক সড়কে হাঁটু সমান পানি। নগরীর মূল সড়কের পাশাপাশি শাখা সড়ক ও বিভিন্ন এলাকায় চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
জাহাজ কোম্পানি মোড়, গ্র্যান্ড হোটেল মোড়, মিস্তিরি পারা, খলিফা পাড়া, কলেজ রোডসহ বিভিন্ন এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানির নিচে তলিয়ে আছে। নগরবাসী এমন জলাবদ্ধতার জন্য শ্যামাসুন্দর খাল ভরাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়াকে দায়ী করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের শ্যামাসুন্দরী খাল পানিতে উপচে পড়ে রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। নগরের চেকপোস্ট থেকে টার্মিনাল হয়ে মহাসড়ক পানিতে নিমজ্জিত। নগরের মুন্সিপাড়া,জলকর, হনুমানতলা, নিউ জুম্মাপাড়া, বাস টার্মিনাল, পর্যটন পাড়া, তাজহাট, বাবুপাড়া, কামারপাড়া, মুলাটোল, বাবু খা, হাবিবনগর, কেরানীপাড়া, ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির পেছন, নীলকণ্ঠ, ধাপ হাজীপাড়া, আমাশু, কুকরুল, জুম্মাপাড়া, মুলাটোল, সর্দারপাড়া, সিওবাজার, গণেশপুর, মিস্ত্রিপাড়াসহ নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে আছেন হাজার হাজার পরিবার। এতে নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে।
নগরের প্রতিটি মহল্লার লোকজন নোংরা পানির মধ্য দিয়ে হাঁটাচলা করছেন। মুন্সিপাড়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর তিনতলা ভবনের নিচতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘এত পানি এই শহরে আগে কখনো দেখিনি। এটিই প্রথম আমার বাড়ির নিচতলায় পানি উঠেছে।’
সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, নগরের সবচেয়ে উঁচু জায়গাতেও পানি। এখানে করারই বা কী আছে। শ্যামাসুন্দরী খাল উপচে রাস্তা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। উঁচু নর্দমা ও ফুটপাত মহাসড়ক, সড়ক সব তলিয়ে গেছে পানিতে। এরপরও মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সিটি করপোরেশন।
এদিকে রাত থেকে বিঘ্নিত হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। সবমিলিয়ে ভয়াবহ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রংপুর নগরবাসী। যা স্মরণকালেও মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের।
সূত্রঃ প্রথম আলো, বাংলা রিপোর্ট