।। জাহিদ হাসান ।।
উলিপুরে মলিভানকে অনেকে সহায়তার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। শুধু আশার বাণী শুনিয়ে সবাই চলে গিয়ে আর খোঁজ নেননা মলিভানের। টিনের একটি ভাঙা চালা, নেই কোন বেড়া। সেখানেই বসবাস করেন তিনি। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করলেও দেখার যেন কেউ নেই। বয়সের ভারে চলতে পারেন না, ঝড় বৃষ্টিতে ব্যাপক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাকে। এ যেন সীমাহীন কষ্ট এক বৃদ্ধা মায়ের। তার এ কষ্টের কথা শুনে লকডাউনের সময় এসপি মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম তাকে খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেছিলেন।
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মধুপুর ডাক্তার পাড়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের স্ত্রী অসহায় বৃদ্ধা মলিভান বেওয়া। ১৯৭১ সালে স্বামী আবুল কাশেম মারা গেলে মা বাবার আশ্রয়ে চলে আসে। তাদের মৃত্যুর পর ভাইদের বাড়িতে, অন্য মানুষদের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। নিঃসন্তান এ বৃদ্ধা মহিলার থাকার স্থানটুকুও নড়বড়ে, সীমাহীন কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছেন মলিভান।
স্থানীয়রা জানান, বেড়াবিহীন ভাঙা চালায় অতি কষ্টে জীবনযাপন করছেন মলিভান।তার চালাটি মেরামত করতে সমাজের বিত্তবান ও মানবিক মানুষদের অনুরোধ জানান তারা।
বৃদ্ধা মলিভান বেওয়া জানান, তোমরাগুলা মোর ছবি তুলেন, মোক কাইয়ো দেহেনা, ঘরের বেড়া নাই, ভাঙা ঘরোত থাকং, বৃষ্টি আইলে চালার টেরা (ছিদ্র) দিয়ে পানি পড়ে সউগ ভিজি যায়। মোক একনা ঘর করি দেও বাবা। মুই এই বয়সে চলবের পাংনা, ঘরোত থাকপের পাংনা, তাইলে মুই কেমনে থাকিম। ঘর মেরামতসহ চলাফেরার স্থায়ী সমাধানের দাবী জানান অসহায় মলিভান বেওয়া।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবায়দুল ইসলাম বলেন, সরকারি রিলিফ ছাড়া কিছুই নেই তাকে দেওয়ার মত। আমি এবং চেয়ারম্যান মিলে প্রতিবারে রিলিফ দেই। তার একটি ঘরের বিশেষ প্রয়োজন বলে এ প্রতিবেদককে জানান ওই ইউপি সদস্য।
ধরনীবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুলু বলেন, মলিভানের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি।তাকে সহযোগীতা করেছিলাম।এখনতো তেমন কিছু নেই, দেখি সামনে যা আসবে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, মলিভানের খোঁজখবর নিয়ে তাকে সহযোগীতা করা হবে।