।। সুভাষ চন্দ্র ।।
উলিপুরে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। টানা কয়েকদিনের তিস্তা নদীর ভাঙনে বসত-বাড়ীসহ কয়েকশত একর আবাদী জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙন হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক সহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। স্থানীয় লোকজন বাঁশ, গাছের গুড়ি ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা করছেন। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো ভিটা-মাটি হারিয়ে এসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সরেজমিনে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার গ্রামের গিয়ে দেখা যায়, প্রতি মহুর্তেই ভেঙ্গে যাচ্ছে রোপা আমন ক্ষেতসহ ঘর-বাড়ি। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে পার্শ^বর্তি উচু স্থানে। দীর্ঘ বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই ভাঙনের শিকার পরিবার গুলোর মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এসময় কথা হয়, ওই গ্রামের নুরল হকের সাথে হলে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘হাল গিরস্ত সইগ আছিল বাহে, আইজক্যা মুই নিঃস্ব হয়া গেনু। এহন হামাক বাঁন্ধের আস্তাত যায়া থাকা নাগবে।
একই কথা বলেন, ওই গ্রামের আজিজার রহমান, আবুল মালেক, জয়নাল আলী, মোস্তা মিয়াসহ অনেকে। তারা জানান, তিস্তার ভাঙনের এ গ্রামের মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নদের তীব্র ভাঙনে গোড়াইপিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিয়ারী দাখিল মাদরাসা, গোড়াইপিয়ার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ঝাঁকুয়াপাড়া, মন্ডলপাড়া, কুমারপাড়া, মুলাধোয়ারপাড় গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক ঘর-বাড়ী ও সহস্রাধিক একর ফসলী জমি ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।
এদিকে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু, তিস্তা নদী রক্ষা জেলা কমিটির সভাপতি সহকারি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সরদার, থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার,আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আহসান হাবীব রানা, নিমাই সিংহ ভাঙন কবলিত গোড়াইপিয়ার এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙনরোধ ও সহায় সম্বলহীন পরিবার গুলোকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি, দ্রুত ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে।