|| জেলা প্রতিনিধি ||
কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউন এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের করা ক্রিমিনাল মামলার অগ্রগতি জানতে মামলার কেস ডায়েরি তলব করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সাংবাদিক আরিফুলের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোশাররফ হোসেন এ আদেশ দেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা (জিআরও) আমজাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ প্রকাশের জেরে চলতি বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করতে চাওয়া এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ তিন নির্বাহী মেজিস্ট্রেট ও অজ্ঞাত ৩৫/ ৪০ জনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন সাংবাদিক আরিফ। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ৩১ মার্চ সেই মামলা রেকর্ড করে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ। মামলার নম্বর-২৪, জি আর নম্বর-৮৩/২০২০(কুড়ি)।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের আইজীবী আজিজুর রহমান দুলু জানান, পুলিশ প্রবিধানমালা ১৯৪৩ এর ২১ প্রবিধান এর অধীনে আবেদনটি দাখিল করা হয়। গতকাল (১৯ আগস্ট) আবেদনের শুনানী হয়। এতে অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানসহ প্রবীন আইনজীবী এনামুল হক চৌধুরী চাঁদ অংশ নেন। উক্ত আদালতে উপস্থিত জেলা বারের অন্যান্য আইনজীবীগণ এতে সহযোগীতা করেন।
তিনি আরও জানান, এই কেস ডাইরি তলবের ফলে জানা যাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এই মামলার বিষয়ে কতটুকু তদন্ত করেছেন, কি কি বিষয়ে তদন্ত করেছেন এবং আর কতদিনের মধ্যে অবশিষ্ট তদন্ত সম্পন্ন করে পুলিশ প্রতিবেদন প্রদান করতে পারবেন।
জিআরও আমজাদ হোসেন জানান, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সিডিসহ আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা আদালতের আদেশ থানায় পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও নানা অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধান করায় গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের বাড়িতে ঢুকে তাকে ধরে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের কারাদণ্ড দেয়। তার বাড়িতে আধা বোতল মদ এবং গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ আনা হয়। মধ্যরাতে বাড়ি থেকে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে সাজা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে এ ঘটনা ফলাও করে প্রচার হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় পরদিন ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।