|| নিউজ ডেস্ক ||
কুড়িগ্রাম জেলায় কমতে শুরু করেছে ধরলা নদীর পানি। কমে যাচ্ছে ব্রহ্মপূত্র নদের পানিও। তবে পানি কমলেও মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকালে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪৯ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ এবং ধরলা নদীর পানি ব্রীজ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ধরলা নদী অববাহিকার পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে অনেকেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। বন্যার্তরা সাময়িক পানিবন্দী অবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি পেলেও এখন ভাঙা বাড়িঘর ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আশংকায় রয়েছে। অপরদিকে, টানা বন্যার কারণে ঘরে বন্দী জীবন কাটছে তাদের। ক্রমেই ফুরিয়ে যাচ্ছে গবাদি পশুর খাদ্য। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে তারা। এছাড়াও আসন্ন ঈদের এই সময়টাতে তারা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। বানভাসী কৃষকরা আমনের বীজতলা নিয়ে বিপাকে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, প্রথমদফা বন্যায় ৯টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মোট ১৬ হাজার ১শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১১জন পানিতে ডুবে মারা যায়। দ্বিতীয় দফা বন্যায় ৫৬টি ইউনিয়নে ৬৩ হাজার ১৩০টি পরিবার পানিবন্দী হয়েছে বলে জানানো হয়। বন্যায় পানিতে ডুবে মারা যায় ৮জন। সর্বগ্রাসি বন্যায় ৩২টি পয়েন্টে ৭ কিলোমিটার নদী ভাঙন হয়েছে। বন্যায় বীজতলা, আউশ, পাট, মরিচ ও শাকসবজীর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৭৬৭ হেক্টর জমিতে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, বন্যার্তদের সহযোগিতায় উদ্ধার টিম, ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৩৬টি গুচ্ছগ্রাম ২৪টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাক প্রস্তুত করা হয়। স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১০টি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ৭৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য থেকে ২টি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ১৬০টি নলকুপ পরিদর্শন, ২টি নলকুপ স্থাপন, ৪ হাজার ২৭০টি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ৬৮টি জেরিকেন সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে ১৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৫৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার পরিবারকে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ঈদ উপলক্ষে ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৫২৫টি পরিবারের মাছে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব