।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে গত দু দিনের অবিরাম ভারী বর্ষণে উপজেলার সর্বত্রই পানিতে থৈ থৈ করছে। বেশিরভাগ এলাকার গ্রামীণ কাঁচা-পাঁকা সড়কসহ পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক মৎস্য খামার তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাছ চাষীরা। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বাঁধের রাস্তাসহ উচুস্থানে আশ্রয় নেয়া বন্যাকবলিত পরিবারগুলো বৃষ্টিতে ভিজে নিদারুণ কষ্টে আছেন। আশ্রিত অনেক পরিবারে চুলায় আগুন জ্বালাতে না পেরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
রাজারহাট আবহাওয়া দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, সোমবার ২০.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও গত রবিবার এ এলাকায় সবোর্চ্চ ২০৪.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত এ এলাকায় অব্যাহত ভারী ও মাঝারী বর্ষণ হতে পারে। টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা স্থায়ী হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, দফায় দফায় বন্যা ও গত দুইদিনের অবিরাম বর্ষণের উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও জলাশয় তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৬২ হেক্টর আয়তনের ছোট-বড় পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ লাখ পোণা মাছসহ কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়া মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে মৎস্য চাষীরা। উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মৎস্যচাষী অনবিন্দু দাস, মৌজা মালতিবাড়ি গ্রামের শাহীনুর, দলদলিয়া ইউনিয়নের দলবাড়ি গ্রামের রবিউল ইসলামসহ উপজেলার চার শতাধিক মৎস্য চাষীর পুকুরে মাছ ভেসে গেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা তারিকুর রহমান সরকার বলেন, বন্যা ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে উপজেলার অনেক মাছ চাষী মারত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোড সুত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।