।।জাহিদ হাসান।।
উলিপুরে বন্যার পানিতে দিশেহারা হয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে খাদ্য সংকটে পড়েছে।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে উলিপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ধরলা নদী ব্রীজ পয়েন্টে ১০৩, ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে ৯৩ ও নুনখাওয়া পয়েন্ট ৮৭ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার থেতরাই, ধামশ্রেণী, হাতিয়া ও বজরা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছে গর্ভবতি মা ও শিশুরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, থেতরাই ইউনিয়নের পাকারমাথা নামক এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দী হয়ে খাদ্য সংকটে পড়েছে মানুষ। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্কুলের মাঠসহ উঁচু জায়গায়। পানিবন্দী হয়ে গবাদীপশু নিয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন বানভাসীরা। এমনিতেই নদী ভাঙনের শিকার এ ইউনিয়নের তিস্তা পাড়ের মানুষ, তার মধ্যে আবার বন্যার পানি।
পানিবন্দী চাঁদ মিয়া, শহিদুল, চায়না, সাহেরা বেগমসহ আরো অনেকে এ প্রতিবেদককে জানান, হামরা বানের পানিত কি ভাসি যামো, কাইয়ো হামার খোঁজ নেয়না। ঘর-বাড়ি ছাড়ি স্কুলের মধ্য আছি। এমনিতো ভাইরাসের কারণে কামাই (ইনকাম) নাই, ফের আইলো বানের পানি, কনতো হামরা এলা কি করমো। কাজ কর্ম নাই, দিন আনি দিন খাই।হামার কথা কাইয়ো ভাবে না, বানের পানি আর নদী ভাঙন হামার সব শেষ করিল।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুরে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আব্দুল কাদের জানান, পানিবন্দী মানুষের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা পেয়েছি, যা প্রতিটি ইউনিয়নে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম জানান, পানিবন্দী মানুষ ও বন্যা কবলিত এলাকার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। জেলায় ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৪০০মে. টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।