।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে সর্বস্তরের মানুষের কয়েক মাসের টানা সফল আন্দোলন ও অক্লান্ত পরিশ্রমে সদ্য খননকৃত ‘বুড়িতিস্তা’ নদীতে বর্জ্য ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌর শহরের অদূরে গুনাইগাছ ব্রিজের মুখে বর্জ্য ফেলার এমন দৃশ্য পথচারীদের সব সময় চোখে পড়ছে। ৩ মাস আগে সরকারের বিপুল পরিমান টাকা ব্যয়ে খনন করা নদীতে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা ও নদী দখলের দৃশ্য ফেসবুকে ভাইরাল হলে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে বুড়িতিস্তা নদীর গুনাইগাছ ব্রীজের মুখে আবর্জনা ফেলে পানি প্রবাহের গতিপথ বন্ধ করার হীন অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন “বুড়িতিস্তা বাঁচাও, উলিপুর বাঁচাও” আন্দোলনের সংগঠক পরিমল মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বুড়িতিস্তা’ ব্রিজের মুখ ও পানির প্রবাহ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে উলিপুরে পৌরসভা বর্জ্য ফেলছে। বুড়িতিস্তা বাঁচাতে উলিপুরের জনগনকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করলাম সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে ‘বুড়িতিস্তা’ নদী খনন করল। আর উলিপুর পৌরসভার মেয়র সেই বুড়িতিস্তা নদী বর্জ্য ফেলে ভরাট করার মিশন নিয়েছে।
বুড়িতিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম সহযোগী সংগঠন রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সভাপতি আপন আলমগীর তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, দলমত নির্বিশেষে উলিপুরের আপামর জনতার আন্দোলনের ফসলকে এভাবে ভাগাড়ে পরিণত করার অপচেষ্টা পরিকল্পিত বলে মনে করি। আমি এই হীন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। দিনের পর দিন আন্দোলন করে আমরা যদি নদী উদ্ধার করতে পারি, তবে এর রক্ষার্থে রাজপথে নামার সক্ষমতাও আমাদের আছে।
সিনিয়ার সাংবাদিক তৈয়বুর রহমান বলেন, যে ‘বুড়িতিস্তা’ নদী খননের জন্য উলিপুরের সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই বুড়িতিস্তা নদীর ব্রিজ পয়েন্টে পৌরসভার আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে একটি বিশেষ মহল। যেন এসব দেখার কেউ নেই। এখানে সরকারের প্রশাসনও নির্বিকার। কেউ কারো কথা শুনছে না, এটা কি রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের পরিচয় নয়। উলিপুর কি আজ অভিভাবকহীন, উলিপুরে কি কোনো কর্তৃপক্ষ নেই? প্রয়োজনে আবারো জনগনকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এ ব্যাপারে উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ওখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হয় আমার জানা ছিলনা। আমি তিনদিন আগে খবর পাওয়ার পর তা বন্ধ করে দিয়েছি।
সরকারিভাবে খননকৃত নদীতে পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা ফেলতে পারে কিনা জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ জানান, এ ব্যাপারে এর আগে কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। আমি খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিচ্ছি।