|| আব্দুল মালেক ||
উলিপুরের ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। ব্রহ্মপূত্র ও তিস্তা নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারনে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি এসব মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, পার্শ্ববর্তি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।
সরেজমিনে শনিবার ব্রহ্মপূত্র নদ অববাহিকার উপজেলার হাতিয়া গ্রাম, নয়াদাড়া, চর বাগুয়া, অনন্তপুর,বাবুর চর, গাবুরজন, নামাজের চরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গত তিন দিন ধরে মানুষজন পানি বন্দি রয়েছে। পানি বন্দি এসব মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পানি বন্দি এসব মানুষ রান্না করতে না পেরে নিদারুণ কষ্টে রয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম এখনও শুরু না হওয়ায় বন্যা কবলিত বানভাসি মানুষজনের ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া ব্রহ্মপূত্র নদ বিচ্ছিন্ন সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা প্লবিত হয়েছে। এদিকে, তিস্তা নদীর অববাহিকার দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৬ সে.মিটার ও ব্রহ্মপূত্র নদীর পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সে.মিটার,নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ২৮ সেঃমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে এছাড়াও তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭ সে.মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তি এলাকাসহ আশপাশের নতুন-নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে প্রায় বীজতলা, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা ও শাকসবজির ক্ষেতসহ গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বন্যা কবলিত মানুষজনের সাথে কথা বলেন এবং তাদের সার্বিক খোঁজখবর নেন। বন্যা মোকাবেলা করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের, হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, উলিপুর প্রেসক্লাবের আহবায়ক আনিছুর রহমান মিয়াজী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।