|| জেলা প্রতিনিধি ||
উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামে এই দুই নদীর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই দিন ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এই দুই নদীর অববাহিকার নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কৃষিজমিসহ চরাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার (২৬ জুন) দুপুর ১২ টায় গত ৬ ঘন্টায় ধরলা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্টে বিপদ সীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চিলমারী পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫ থেকে ৬ দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে জেলায় মাঝারি আকারে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সদর উপজেলার ধরলা অববাহিকার নি¤œাঞ্চল সহ ব্রহ্মুপুত্র অববাহিকার যাত্রাপুর, ভোগডাঙ্গা ও ঘোগাদহ ইউনিয়ন এবং নাগেশ^রী, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তার ইউনিয়নের পোড়ার চর, ঝুনকার চর এবং চর কালির আলগার প্রায় শতাধিক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, ৯ নং ওয়ার্ডের মশালের চর সহ ৬ নং ও ৮ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তবে তীব্র নদী ভাঙনের ফলে মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ওই ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, আগামী কয়েকদিন অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার সদর উপজেলা সহ নাগেশ^রী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার বেশ কিছু অঞ্চলে মাঝারি আকারে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করবে।
জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার প্রশাসনের তরফ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।