।। নিউজ ডেস্ক ।।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুস্থ্, অসহায় ও কর্মহীন মানুষদের সরকারি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে নিরপেক্ষ তালিকা করার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এমএ মতিন। প্রকৃত অভাবগ্রস্ত ও কর্মহীনদের বাদ দিয়ে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ চেয়ারম্যান-মেম্বার নিজেদের খুশি মতো তালিকা তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
২৪ এপ্রিল নিজের ফেসবুকে সংসদ সদস্য লিখেছেন: ‘কুড়িগ্রাম-৩ সম্মানিত ইউপি চেয়ারম্যান/মেম্বার/কাউন্সিলর ভাইবোনেরা, আপনাদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও যারা সরকারি নির্দেশনা ও গাইডলাইন অগ্রাহ্য করে নিজেদের স্বার্থে খেয়াল খুশিমতো ঘরে বসে ত্রাণের তালিকা তৈরি করছেন কিংবা পুরাতন তালিকা চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তারা সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্য এটা করছেন। বর্তমান দুর্যোগকালে এটা চরম জনস্বার্থবিরোধী কাজ। অথচ জনসেবার অঙ্গীকার করে আপনারা নির্বাচনি বৈতরণী পাড় হয়েছিলেন। তাই জনগণের কাছে দেওয়া অঙ্গীকার পূরণের এটাই উপযুক্ত সময়। প্রতি ওয়ার্ডে ত্রাণ কমিটি গঠিত হয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে, স্বচ্ছভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে আপনাদের সহযোগিতা প্রদানের জন্য। তাই মেম্বার/কাউন্সিলর ভাইবোনেরা আপনারা ওয়ার্ডের ত্রাণ কমিটি, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরেজমিনে অবস্থা দেখে (ভাতা ও সুবিধাভোগী বাদ দিয়ে) প্রকৃত হতদরিদ্র, অসহায়, অনাহারি ও কর্মহীন মানুষদের তালিকা তৈরি করুন। আপনাদের মনগড়া তালিকা দিয়ে ত্রাণ বিতরণের সুযোগ পাবেন না। ত্রাণ নিয়ে কোনও কারসাজি বা অনিয়ম সহ্য করা হবে না। সকলের জন্য শুভকামনা।’
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য এমএ মতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণের কমিটি করে সেই কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে দুস্থ, অসহায় কর্মহীন মানুষের তালিকা করার। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটির সঙ্গে নামমাত্র মিটিং করলেও তালিকা করারর সময় তাদের সঙ্গে নেননি। তারা সরেজমিনে বাড়ি বাড়ি না গিয়ে নিজেদের বাড়িতে বসে খেয়াল-খুশি মতো তালিকা করছেন। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের পছন্দের লোকজনকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছেন। এসব তালিকায় বিভিন্ন ভাতাভোগী মানুষসহ একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, যারা প্রকৃত অভাবগ্রস্ত তারা বাদ যাচ্ছেন, যা অনাকাঙ্খিত।’
সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকারকে হয়তো দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা নিতে হতে পারে। এক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ তালিকা প্রণয়ন সরকারের ব্যয় বাড়াবে।’
করোনা পরিস্থিতিতে দিনমজুর শ্রেণির অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে বাড়িতে রয়েছেন যারা খাদ্যকষ্টে দিন যাপন করছেন জানিয়ে অধ্যাপক এমএ মতিন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এই শ্রেণির অনেক মানুষকে তালিকায় স্থান না দিয়ে সামর্থবানদেরও নাম তালিকাভুক্ত করছেন। এছাড়া তারা পুরাতন সুবিধাভোগীদেরও নতুন তালিকায় স্থান দিচ্ছেন। আমি এর প্রতিবাদ করে তালিকা সংশোধনের জন্য বলেছি এবং তাদের তালিকা ফেরত দিয়েছি। আমি বলেছি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত অভাবগ্রস্ত ও কর্মহীনদের তালিকায় স্থান দিয়ে নতুন তালিকা করতে হবে। এতে করে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে।’
এব্যাপারে জানতে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাদেরকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সূত্রঃ banglatribune