।।সুভাষ চন্দ্র।।
“ভাত নাই ঔষধও নাই, এই দুনিয়াত চারটে ভাত দেয়ার কাইও নাই। কেমন করি বাছং বাহে।” কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের ৮৩ বছরের নিঃসন্তান বৃদ্ধা মোছাঃ জেলেখা বেগম (নব্জানী)।
জানা গেছে,দীর্ঘ ৪০ বছর পূর্বে স্বামী মারা যায়। শেষ আশ্রয় হয় ধরনীবাড়ী মাঝবিল বাজারের সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত কোয়াটারে। এরপর জীবন চলে বিভিন্ন লোকের বাড়িতে এবং মাঝবিল বাজারের বিভিন্ন চায়ের দোকানে কাজ করে। প্রতিদিন মানুষের বাড়িতে বা চায়ের দোকানে কাজ করে যা আয় হত তা দিয়েই কোনমতে জীবন চলত তার। করোনা ভাইরার্সে সবকিছু লকডাউন হওয়ায় জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এরপর খেয়ে না খেয়ে ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করেন মোছাঃ জেলেখা বেগম (নব্জানী)।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকালে জেলার উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মাঝবিল বাজারে গিয়ে দেখা যায় মাঝবিল বাজার সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত কোয়াটারে শুয়ে আছেন ওই বৃদ্ধা। সেখানে বিছানা হিসেবে একটি ভাঙা চৌকি, একটি কাঁথা, বালিশ ও মশারি ছাড়াই অসহনীয় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
এ সময় তাঁর সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন `কত নিম্বর চেয়ারম্যানের কাছে গেছনু কোনদিন একনা কিছু দেয় নাই মোক। ভাতা কার্ডের জন্য ট্যাহা নাগে। মুই ট্যাহা কডে পাইম।’
গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যমী যুবক মোছাঃ জেলেখা বেগম (নব্জানী) কে ছবি সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে এবং জনপ্রতিনিধী ও সুশিল সমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করে। স্বামী মারা যাওয়ার ৪০ বছরেও বয়স্ক বা বিধবা ভাতা পাননি মাঝবিল বাজারে সবার পরিচিত নিঃসন্তান মোছাঃ জেলেখা বেগম (নব্জানী)।
এ বিষয়ে ধরনীবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সাংবাদিককে বলেন, এর আগে আমার কাছে কেউ আসেনি। যদিও তালিকা পাঠানো হয়েছে। তবুও চলতি তালিকায় তাকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।