|| আঃ ছোবহান জুয়েল ||
সরকার, সমাজের সচেতন শ্রেণী আর কিছু উদ্যমী তরুণের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার পরেও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর ফেরত মানুষের ঢল যেন নিয়ন্ত্রণে আসছে না কিছুতেই। এর সাথে ইদানিং যুক্ত হয়েছে তাদের উগ্র আচরণ। আর অনেকক্ষেত্রে এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরাই। সেরকম একটি ভোগান্তিতে পড়েছেন উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক মঞ্জুরুল ইসলাম ও তার কিছু সহযোদ্ধা।
জানা যায়, উলিপুরের ধামশ্রেণীর কিছু যুবক নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় অবস্থানকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে গত সপ্তাহে নিজ গ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডভুক্ত খোয়াজখাবারে ফিরে আসে। গ্রামের বাড়িতে এসে যথেচ্ছা ঘোরাফেরা, বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আড্ডাবাজি করায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন শতদলের মঞ্জুরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক তাদেরকে বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করেন। এতে কোন কাজ না হওয়ায় ওয়ার্ড মেম্বার ও চৌকিদারকে অবগত করেন স্বেচ্ছাসেবকরা। কিন্তু এতে উক্ত যুবকরা স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
এমতাবস্থায় উপায়ান্তর না দেখে মঞ্জুরুল ইসলাম ওয়ার্ড মেম্বার মিন্টু অধিকারীর সহায়তায় পুলিশকে জানালে গতকাল পুলিশ এসে তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার গুরুত্ব বুঝিয়ে তা নিশ্চিত করতে তাগিদ দেন। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় শতদল স্বেচ্ছাসেবী মঞ্জুরুল ইসলামের জন্য। গত ২০ই এপ্রিল গ্রামের জুয়াড়ি নূূর ইসলাম, তার বখাটে ছেলে তাজুল, তাহের সহ ৮/১০ জন মিলে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রহাতে স্বেচ্ছাসেবক মঞ্জুরুলের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে বসে। সে সময় কোনরকমে পালিয়ে জানে বাঁচেন মঞ্জুরুল। সে সময় তার কোন ক্ষতি করতে না পেরে দুস্কৃতিকারীরা সেদিনই তার বাড়ি ঘেরাও করে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। তার নামে অপবাদ ছড়াতেও সচেষ্ট হয় তারা। তাকে করোনা নিয়ে গুজব সৃষ্টিকারী, কোয়ারেন্টাইন আর লকডাউনের অপব্যাখ্যাকারীসহ নানা ধরণের আপত্তিকর কথা বলতে থাকে অবিরাম। এ অবস্থায় নিজেদের বাড়িতে আতঙ্ক নিয়েই অবস্থান করতে হচ্ছে মঞ্জুরুল ইসলাম ও অন্যান্য সদস্যদেরকে। পরিস্থিতির কারণে অন্য কোথাও যাবার উপায় না থাকায় ভয়ে থাকছেন পরিবারের সদস্যরাও।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ধামশ্রেণী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মিন্টু অধিকারী উলিপুর ডট কমকে বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক হামলার নিন্দা জানাই। তিনি স্বেচ্ছাসেবক সদস্যদের পরিবারের পাশে থেকে তাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।
ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে ভুক্তভোগী মঞ্জুরুল ইসলাম ইতিমধ্যেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আর বিষয়টি সুরাহা করতে এলাকার সচেতন জনগণ দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।