|| জাহাঙ্গীর আলম শাকিল ||
উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ী ইউনিয়নস্থ বুড়াবুড়ী বাজারের কাঁচা বাজার, মাছ মাংসের দোকান ও চায়ের স্টলে ভিড় এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হলেও তা যেন মানছে না কেউ। সরেজমিনে দেখা গেছে, বুড়াবুড়ী বাজারে প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার দু’দিন হাট বসে। এ হাটে পার্শ্ববর্তী তিনটি ইউনিয়ন থেকে লোক সমাগম হয়ে থাকে। ১৮ই এপ্রিল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় লক্ষ্য করা গেছে প্রায় দু’হাজার লোকের জনসমাগম। উপজেলা প্রশাসন ও সামাজিক সংগঠন ফিনিক্সসহ স্থানীয় আরও কয়েকটি সংগঠন শুরু থেকেই বাজারে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালালেও অধিকাংশ মানুষ মানছে না সামাজিক দূরত্ব। অনেকাংশেই নেই মাস্কেরও ব্যবহার। এছাড়া বাজারে অনেকের অহেতুক ঘোরাফেরাও লক্ষ করা গেছে।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নির্দেশে কয়েকজন চৌকিদার বাজারে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে অনুরোধ করলেও তাদেরকে তোয়াক্কা করছে না কেউ। এ ব্যাপারে চৌকিদার শ্যামল চন্দ্র বলেন, মানুষ সচেতন না হলে আমাদের পক্ষে জনসমাগম কমানো সম্ভব নয়।
হাট ইজারাদার ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ মন্জুরুল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী দুপুর একটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত হাটের কার্যক্রম চালাচ্ছি এবং জনসমাগম কমানোর জন্য আমরা দু’একদিনের মধ্যেই কাঁচাবাজারটি বুড়াবুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থাপন করবো। এ বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও চলছে।
ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু তালেব বলেন, মানুষকে করোনাভাইরাসের ব্যাপারে সচেতন করার জন্য পৃথক পৃথক একাধিক মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি এবং জনসমাগম যাতে না হয় সেজন্য আমার ইউনিয়নের সকল হাটের মাছ বাজার ও কাঁচাবাজার আশেপাশের স্কুলের নিয়ে যাব যাতে মানুষের ভিড় কমানো সম্ভব হয়।
এ ব্যাপারে সামাজিক সংগঠন ফিনিক্স এর সভাপতি নুর মোহাম্মদ সরকার বলেন, আমাদের সংগঠন বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশেষ করে বাজারগুলোতে আমরা মানুষের মাস্ক পড়া নিশ্চিতকরণ, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণ এবং সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে দোকান বন্ধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা এএসআই মনিরুজ্জামান মনিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি সম্পূর্ণ ইউনিয়নের হাটবাজার ফলোআপ করি। আমি মানুষকে যথেষ্ট সচেতন করার চেষ্টা করেছি, তারপরও যেন কেউই মানছে না। আমি যে মুহূর্তে বাজারে টহলে যাই তখন জনসমাগম কমে যায় আবার বাজার থেকে বের হলেই বেড়ে যাচ্ছে জনসমাগম। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও প্রতিমুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
এলাকার সচেতন জনগণের মধ্যে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে তাই তারা এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।