|| সুভাষ চন্দ্র ||
উলিপুরে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নআয়ের মানুষদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাল বিতরণে অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে সুবিধা বঞ্চিতরা। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের লোকজনের মাঝে ৫ মেট্রিক টন চাল ও আলু বরাদ্দ দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে রবিবার (১২ এপ্রিল) ওই ইউনিয়নের ৮নং ইউপি সদস্য আবু বক্কর খান চর বতুয়াতলি গ্রামের কর্মহীন লোকজনের মাঝে ত্রাণের স্লিপ বিতরণ করেন।
পরে চাল দেয়ার কথা বলে স্লিপসহ ওই ইউনিয়নের মোল্লারহাট ঘাটে তাদেরকে ডাকেন। এ সময় কর্মহীন প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি চাল ও ২ কেজি আলু দেয়ার কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন ওই দিন রাত এগারটার দিকে পরিকল্পিতভাবে মোল্লারহাট ঘাটে তার ছোট ভাই মাইদুল ইসলামকে দিয়ে ১০ কেজি চালের পরিবর্তে ৫ কেজি ও ২ কেজি আলুর পরিবর্তে ১ কেজি বিতরণ করেন। এতে তালিকাভূক্ত সুবিধাভোগি লোকজন আপত্তি জানালে চেয়ারম্যানের ভাই মাইদুল ইসলাম ১০ কেজি চাল দিতে অপারগতা জানায়। এ ঘটনায় স্লিপধারী সুবিধাবঞ্চিতদের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হলে মাইদুল ইসলাম তাদেরকে ত্রাণ না দিয়ে শুন্য হাতে বিদায় করেন। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) ৩০ জন সুবিধাবঞ্চিত মানুষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে অভিযোগ দেয়ার কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় কর্মহীন নিম্ন আয়ের লোকজনের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আবু বক্কর খান স্লিপ দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, লোক সংখ্যা বেশি হওয়ায় চেয়ারম্যানের ভাই রাগ করে তাদেরকে ৫/৭ কেজি করে চাল দেয়ার কথা বলেছে কিন্তু তারা নেননি। তবে পরবর্তী বরাদ্দে তাদেরকে চাল দিতে চেয়েছি। বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে যা বরাদ্দ পেয়েছি, তা বিতরণ করা হয়েছে। মেম্বার তাদেরকে স্লিপ দিয়েছে, সেটা মেম্বারের ব্যাপার। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ওই ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজেদুল করিম জানান, চাল রাতে বিতরণ করায় আমি সেখানে থাকতে পারিনি, সুবিধাভোগীদের চাল কম দেয়ার বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।