|| আব্দুল মালেক ||
করোনাভাইরাসের কারণে উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে না থাকলেও চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক ফোটাচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকুলে থাকায় এবার তেমন কোন রোগ-বালাইয়ের আক্রমন নেই বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। সে কারণে উৎপাদন খরচও কম হবে বলে তারা মনে করছেন। তাই উৎফুল্ল মনে ধানের পাশাপাশি পেঁয়াজ, গম, ভূট্টা, সরিষা, আলুসহ নিত্যপণ্যের চাষাবাদও করেছেন অনেক কৃষক।
আর অনেকটাই নির্লিপ্ত থাকা কৃষি বিভাগের দাবী, সব মিলিয়ে ধানসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। সারাদেশে করোনা ভাইরাস আতংক ছড়িয়ে পড়লেও কৃষকরা জমির ক্ষেতের পরিচর্যার কোন কমতি করছেন না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২৮ হাজার ১’শ ২৯ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে চলতি বোরো মৌসুমে ২১ হাজার ৫’শ ৭৫ হেক্টর জমিতে উফসি, হাইব্রিড ও স্থানীয় জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৯’শ ৫০ হেক্টর জমিতে উফসি, ৫ হাজার ৫’শ ৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৭৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এছাড়া ৫’শ ১০ হেক্টর জমিতে গম, ৪’শ ৫০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা, ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৮’শ ৫ হেক্টর জমিতে আলু, ২’শ ৮৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ ও শাক-সবজি সহ মৌসুমী ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে।
উলিপুর পৌরসভার রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের কৃষক ও সেচ মালিক জাকির হোসেন জানান, ধান গারা (রোপন) পর্যন্ত কৃষি অফিসের কেউ আসেনি। ধানক্ষেতে ওষুধ ও সার দিচ্ছি নিজের বুদ্ধি খরচ করে। বিদ্যুৎ ভালো থাকায় জমিতে পানি দিতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আশা করছেন, সামনে কোন বালা-মুসিবত (বিপদ-আপদ) না হলে ধানের বাম্পার ফলন পাবেন। একই কথা জানালেন নারিকেল বাড়ি সন্ন্যাসীতলা গ্রামের কৃষক খোকন রায় ও বাবলু চন্দ্র বর্মণ। ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক শাহীনুর রহমান জানান, বোরো ধানের পাশাপাশি ৫০ শতক জমিতে শাক-সবজি চাষাবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এসব বিক্রি করে মোটামুটি লাভবান হচ্ছি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বোরো ধানক্ষেতে সবুজের সমারোহ। অনেক কৃষক বলেন, সারাদেশে করোনাভাইরাস আতংক ছড়িয়ে পড়লেও ক্ষেতের পরিচর্যায় তারা কোন কমতি করছেন না। এসব কৃষকের আশা, পরিবেশ অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সুফল পেতে শুরু করেছেন। আশা করছি চলতি মৌসুমে উপজেলায় বোরো ধানসহ সব ফসলের বাম্পার ফলন হবে।